চাঁদের অজানা কিছু রহস্য
চাঁদ – অনেক সময় নস্টালজিক, অনেক সময়
সুন্দরের প্রতীক আবার অনেক সময় আরো অনেক কিছু।
কিন্ত এই চাঁদ যে কত রহ্স্যের আর আধার তা কি
আর চাদের দিকে তাকিয়ে বলা যায়? দূর থেকে জ্বলজ্বলে এই চাঁদকে আমরা দেখেই যায় কিন্তু এর পেটে লুকিয়ে আছে নানা রকমের রহস্যের ঝুলি। তারই কিছু নিয়ে আজকের এই পোস্ট।
**চৌম্বক ক্ষেত্রঃ
চাঁদের সবচেয়ে বড় রহস্যের ব্যাপার হলো চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র। চাঁদের আদপে কোন চৌম্বক ক্ষেত্র নেই। কিন্তু ১৯৬০ সালে নভোচারীদের আনা এবং ১৯৭০ সালে পাওয়া চাদের কয়েকটুকরো পাথর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল সেই পাথরগুলোর
চৌম্বক ক্ষেত্র আছে। তাহলে কথা হচ্ছে চাঁদে যদি সত্যিই কোন চৌম্বক ক্ষেত্র না থেকে থাকে তাহলে পাথরগুলো কারা রেখে গিয়েছিল চাঁদে ? এলিয়েনরা?
সেটাও তো এখন পর্যন্ত সম্ভব না বা সম্ভব হলেও প্রমান পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ব্যাপক গবেষনার পর বিজ্ঞানীরা পরে বের করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে চাদে আসলে আগে চৌম্বক ক্ষেত্র ছিল কোন এক সময়ে। তবে কি কারনে চাঁদের সেই চৌম্বক ক্ষেত্র এখন গায়েব হয়ে গিয়েছে তা এখনও আমাদের পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেন নি। একদল বিজ্ঞানী আবার দাবি করছেন যে চাদ আসলে আমরা যা ভাবি তা না। চাঁদ হলো শুধু একটিপাথরের দলা যা অচিরেই গুড়িয়ে যেতে
পারে। তবে এ কথার তেমন কোন প্রমান,
সত্যতা বা থিওরি পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।
**দ্যা মুন ইফেক্টঃ
পৃথিবীর উপর চাঁদের প্রভাদ কোনভাবেই
অস্বীকার করা যায়না। অনেকেই বিশ্বাস করেন পরিপুর্ণ চাঁদ অর্থাৎ চাঁদ যখন পুর্ণ থাকে বা পূর্নিমার রাতগুলোতে চাঁদ মানুষের ভেতর অদ্ভত সব ব্যাপার ঘটায়। যদি বিজ্ঞান এসবের কোন ব্যাখ্যা দেয় না। তবে আর কিছু করতে না পারলেও
বিজ্ঞানীরা একটি জিনিষ নিশ্চিত করেছেন আর সেটি হলো চাঁদ আমাদের ঘুমানোর প্রাত্যহিক রুটিন গড়বড় করে দিতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ বেজেল (সুইজারল্যান্ড) – এর একটি বৈজ্ঞানিক
পরীক্ষায় এটির প্রমান পাওয়া গিয়েছে।
১০০ ভলান্টিয়ারের উপর এই গবেষনায় দেখা
গিয়েছে পুর্নিমার সময় মানুষের ঘুমের খুব বেশী সমস্যা হয়, স্বাভাবিক রুটিনটি ঠিক থাকেনা আর অন্যান্য সময়ে ঘুম মোটামুটি ঠিক থাকে। এ থেকে আরেকটা ব্যাপার বের হয়ে আসে। যদি পুর্নিমার
সময় ঠিক মত ঘুম না হয় তাহলে মানুষের মাথায় হেলুসিনেশন হতে পারে আর তারা উল্টোপাল্টা আচরন করতে পারে বা দেখে।
কারন ঘুম কম হলে মানুষের মাথা ঠিক ঠিক মত কাজ করে না। আর সেই কারনেই হয়তো পুর্নিমার সময় দুনিয়ার সব ভৌতিক ব্যাপার স্যাপারের কথা বলা হয়।
**চাঁদের উৎপত্তি কোথায়?
চাঁদ আসলে এসেছে কোথা থেকে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর এখনো কারও জানা নেই তবে কিছু বিদ্বান ব্যাক্তি মাঝে মধ্যেই কিছু থিওরি দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে মোটামুটি ৫টি থিওরি এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
**The Fission Theory এর মতে চাঁদ ছিল পৃথিবীর একটি অংশ যে পৃথিবীর
ইতিহাসের প্রথম দিকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল। তাদের মতে চাঁদ ছিল প্রশান্ত মহাসাগরের একটি অংশ।
**The Capture Theory মতে চাঁদ ছিল ভেসে বেড়ানো কোন বস্তু যা পৃথিবীর গ্রাভিটেশন জোনে আসার পর আটকে যায় আর সেই থেকে চাদ আছে আমাদের সাথে।
**Ejected Ring Theory এর মতে চাঁদের জন্ম হয়েছিল কোন আরেকটি গ্রহের সাথে সংঘর্ষের ফলে আর সংঘর্ষ হয়েছিল আমাদের পৃথিবীর সাথে।
এগুলো ছাড়াও চাঁদ নিয়ে রহস্য আর অজানা ব্যাপারের কমতি নেই। তবে যাই হোক না কেন, চাঁদ তো চাঁদই। মাটি থেকে আকাশের চাদ দেখার আনন্দটাই অন্যরকম।
আর সে যদি হয় ঈদের চাঁদ তাহলে তো কথায়
নেই। কোন একদিন আমাদের দেশ থেকেও
চাঁদে মহাকাশযান পাঠানো হবে আর আমরাও হয়তো চাঁদে ভ্রমন করতে পারব। হয়তো দিবা-স্বপ্ন তবুও ভাবতে দোষ কি?
না জানা চাঁদের কিছু রহস্য।
আপনারা সকলেই জানেন যে চাঁদ আমাদের এক অতি পরিচিত একটি বস্তু। ছোটবেলা থেকেই আমরা
সকলেই ‘চাঁদমামা’ কে দেখে বড় হয়েছি এবং দাদা-দাদি ও বাবা-মায়ের কাছে চাঁদের বুড়ি ইত্যাদি নানা গল্প কাহিনী শুনেছি।আগে আমাদের মা চাঁদ মামাকে দেখিয়ে খাবার খাওয়াতেন ।কিন্তু আজকের মায়েরা মোবাইলে কাটুন দেখিয়ে খাবার খাওয়ায় ।যুগ পাল্টে গেছে কিন্তু মায়ের ভালোবাসা সেইরকমই আছে ।
একপর্যায়ে টেলিস্কোপে চাঁদ দেখে বিজ্ঞানী গ্যালিলিও মনে করেছিলেন চাঁদে বিশাল সমুদ্র আছে এবং সে হিসেবে চাঁদের ওপর বিভিন্ন এলাকার নামকরণও করেছিলেন গ্র্যালিলিও । অবশ্য আজ আমরা জানি এসবই
মানুষের কল্পনা মাত্র, যদিও চাঁদের ‘সমুদ্র’গুলি আজও বিদ্যমান।
চাঁদে কোনও জীব নেই বা থাকতেও পারে না কারণ সেখানে বায়ু বা জল কিছুই নেই, যদিও ভারতের ‘চন্দ্রযান-1’ দ্বারা পাঠানো
তথ্য থেকে জানতে পারা গিয়েছে চাঁদে সামান্য পরিমাণে জল হয়ত থাকতে পারে যা জীবন ধারণের জন্য পর্য্যাপ্ত নয় । কিন্তু চাঁদ সম্পর্কে একটা রহস্যের সমাধান বহুদিন পাওয়া যায় নি, আর তা হল আমাদের চাঁদ এল কোথা থেকে? এ রহস্যের সমাধান সম্প্রতি পাওয়া গিয়েছে। 1970 সাল পর্য্যন্ত চাঁদের উত্পত্তি সম্পর্কে অর্থাত্ চাদ যেভাবে সৃষ্টি হয় এ বিষয়ে সংগ্রহীত তিনটি মতবাদ গ্রহনযোগ্য হিসেবে মনে করা হত।সেগুলো নিচে বর্ননা করা হলো
এই তথ্যা অনুসারে তীব্র বেগে পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে পৃথিবীর এক ক্ষুদ্র অংশ বিষুবীয় অঞ্চল থেকে ছিটকে যাওয়ার ফলেই চাঁদের সৃষ্টি হয়।
এই মতবাদ অনুসারে চাঁদের উত্পত্তি এক স্বাধীন মহাকাশীয় পিণ্ড রূপে হয়েছিল ।যা পরবর্তিকালে পৃথিবীর অভিকর্ষের টানে বন্দি হয়ে যায়।
জানা গেছে তীব্র বেগে পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে চাঁদের উত্পত্তির মতবাদটি সর্বপ্রথম প্রণয়ন করেন চার্লস্ডা রউইনের পুত্র জর্জ ডারউইন, 1879 খৃষ্টাব্দে। তাঁর এই
ধারণার প্রধান কারণ ছিল পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে ঘনত্বের তফাত। তিনি জানতেন যে পৃথিবীর ঘনত্ব 5.57 এবং সে’তুলনায় চাঁদের ঘনত্ব 3.34, যা প্রায় পৃথিবীর বহিঃস্থ স্তরের ঘনত্বের সমতুল্য। সুতরাং পৃথিবীর বহিঃস্থ স্তরের উপাদান থেকে চাঁদের উত্পত্তির সম্ভাবনা একেবারে অমূলক নয়।
জর্জ ডারউইন আরও বলেন যে পৃথিবীর বহিঃস্থ স্তরের কিছু অংশ ছিটকে যাওয়ার ফলেই প্রশান্ত মহাসাগরের সৃষ্টি হয়েছিল।জর্জ ডারউইনের এই মতবাদ বহুদিন ধরে মানুষ মেনে নিয়ে ছিল। কিন্তু তারপর ক্রমশঃ
বুঝতে পারা গেল পৃথিবীর
ঘূর্ণনের গতি কোনও সময়েই এত দ্রুত ছিল না যার ফলে পৃথিবীর বহিঃস্থ স্তর ছিটকে বেরিয়ে
আসতে পারে। তাছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরের উত্পত্তি নিয়েও যথেষ্ট অনিশ্চয়তা ছিল।
জেনেনিন কিছু তথ্য
প্রথমতঃ প্রশান্ত মহাসাগরের আয়তন চাঁদের আয়তনের তুলনায় অনেক কম; তার মানে কেবলমাত্র পৃথিবী থেকে ছিটকে যাওয়া বস্তু থেকে চাঁদের উত্পত্তি হওয়া অসম্ভব।
দ্বিতীয়তঃ চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হিসেবে প্রায় 4,500 কোটি বছর ধরে পৃথিবীর কক্ষপথে পরিক্রমণ করছে। সে তুলনায় প্রশান্ত মহাসাগরের উত্পত্তি হয়েছিল আজ থেকে আনুমানিক 75 কোটি বছর আগে,মহাদেশীয় চলনের ফলস্বরূপ।
আরও একটি অসঙ্গতি হল চাঁদের কক্ষপথ। যদি সত্যিই চাঁদের উত্পত্তি পৃথিবী থেকে বিখণ্ডিত অংশ থেকে হয়ে থাকে তাহলে চাঁদের কক্ষপথ পৃথিবীর বিষুব রেখার সমান্তরাল হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা নয়।
বস্তুতঃ চাঁদের কক্ষপথ
পৃথিবীর বিষুবরেখার সঙ্গে 28.5 ডিগ্রি কোণাকুণি রয়েছে। সুতরাং জর্জ ডারউইনের ধারণা ভুল ছিল।
বারে যদি আমরা দ্বিতীয়
সম্ভাবনাটির দিকে তাকাই তাহলে তা’তেও কিছু সমস্যা দেখতে পাব। যদি সত্যিই পৃথিবী ও চাঁদের উত্পত্তি একই উপাদান থেকে একই সংঙ্গে হয়ে থাকে তাহলে উভয়ের ঘনত্ব এক হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। সুতরাং এ’ধারণাটিরও কোনও যুক্তি নেই। চাঁদের উত্পত্তি সংক্রান্ত তৃতীয় মতবাদটি সামনে আসে 1950 খীষ্টাব্দে। এই মতবাদ অনুসারে গ্রহাণুদের মত চাঁদও একটি স্বাধীন মহাকাশীয় পিণ্ড যা কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবীর অভিকর্ষের টানে বন্দি হয়ে পড়ে। কিন্তু এখানেও একটা বিশাল সমস্যা আছে, বিশেষ করে চাঁদের রাসায়নিক গঠনের
ক্ষেত্রে। চাঁদের জন্ম যদি
সত্যিই অন্যান্য গ্রহাণুদের মত হয়ে থাকে তবে তাদের রাসায়নিক গঠনের মধ্যে সাদৃশ্য থাকা উচিত । যা কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় না।
তো বন্ধুরা পারলে একটা ভালো কমেন্ট করে যাবেন ।
Tags: চাঁদের অজানা কিছু রহস্য,Ojana tottho,জানা অজানা বিজ্ঞান,মহাবিশ্ব অজানা রহস্য,মহাকাশের অজানা কাহিনী,না জানা রহস্য,জানা অজানা ইতিহাস,জানা অজানা খবর,রহস্যময় কিছু মানুষের নাম
পোস্ট রেটিং করুন
টিউটোরিয়ালটি কেমন লেগেছে মন্তব্য করুন!